হাসপাতালে পঁচা মাছ ও নানা অনিয়মে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বাস্থ্য পরিচালক

বাঁশখালী হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে উপস্থিতি দেখতে বায়োমেট্রিক মেশিনের পাসওয়ার্ড না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে দুর্যোগ প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে হাসপাতালের চিত্র দেখে উপস্থিত চিকিৎসকদের উপর ক্ষোভ ঝারেন তিনি। এসময় চিকিৎসক উপস্থিতির চিত্র দেখতে বায়োমেট্রিক মেশিনের পাসওয়ার্ড চাইলেও দেখাতে পারেননি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কমরুল আযাদ ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তৌহিদুল আনোয়ার।

blank
blank
image

সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতাল গেটে নেমেই টিএইচও’কে খুঁজেন স্বাস্থ্য পরিচালক। টিএইচও নাই শুনতেই ক্ষেপে যান। পরে জরুরী বিভাগেঢুকতেই অপরিচ্ছন্ন পর্দা দেখে নিজ হাতেই টেনে ছিঁড়ে ফেলেন। পরে টিএইচও’র অফিস কক্ষে গিয়ে আরএমও’কে উদ্দেশ্য করে বলেন, তুমি আরএমও? তুমি হাসপাতালের রোগীর খাবারে পঁচা মাছ দেয়ার কারণ কি? আমার কাছে প্রমাণসহভিডিও আছে। এটা অন্যায়। আজকে আউটডোর ও জরুরী বিভাগে কতজন রোগী দেখেছো তার তথ্য দাও। টিএইচও এভাবেই বুঝি চাকরি করছে। এসময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে পরে কথা বলবেন বলে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন পরিচালক।

সাড়ে ৬টার দিকে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে ঢুকেন টিএইচও ডা. কমরুল আযাদ। তিনি ঢুকতেই ক্ষেপে যান স্বাস্থ্য পরিচালক। এসময় টিএইচও এবং আরএমও’র কাছে বায়োমেট্রিক হাজিরার পাসওয়ার্ড চাইলেও দুজনই দেখাতে পারেননি। এর আগে বিকালে উপজেলার রায়ছটায় দুর্যোগ প্রস্তুতির পরিদর্শন করেন। 

জানা যায়, সকালে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ডা. জাফরিন জাহেদ জিতি। টিএইচও ছিলেন সিভিল সার্জন অফিসের সভায়। ডা. জিতি সারাদিন জরুরী বিভাগে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও স্বামী ডা. তৌহিদুল আলমকে দায়িত্ব দিয়ে বিকালে হাসপাতালের নিজ বাসায় প্রাইভেট চেম্বার করছিলেন। এরমধ্যে পরিচালকের উপস্থিতির খবর পেয়েই শিশু কন্যাকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে যান ডা. জিতি। বিষয়টি পরিচালক মহোদয় হয়তো বুঝতে পারেননি। অল্পক্ষণ পরেই হাসপাতালে যান ডা. মুনিরা ইয়াসমিন।
পরিদর্শনকালে পরিচালক নানা অনিয়ম দেখে ক্ষোভে উচ্চস্বরে কথা বলতে বলতে বের হয়ে আসেন। ডিজিকে এসব বিষয় জানানোর কথা বলেন তিনি। এরমধ্যে কোন এক ব্যক্তিকে ফোনে চিকিৎসকদের উপস্থিতির বিষয়ে অবগত করেন স্বাস্থ্য পরিচালক। এসময় ফোনে বলতে শোনা যায়, আটজন ডাক্তারের মধ্যে উপস্থিত মাত্র চারজন। আমি ব্যবস্থা নিব। 

পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির সাংবাদিকদের জানান, ‘আমি দুর্যোগ প্রস্তুতি পরিদর্শন করতে এসেছি।’ অনিয়ম দুর্নীতি পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে পরে জানানো হবে। আপনারা আমার সাথে যোগাযোগ করবেন।’

হাসপাতালের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বাঁশখালী হাসপাতালে নিম্মমানের খাবার বিতরণ নিয়ে রোগীদের অভিযোগ থাকে প্রায়সময়।  গত ১মে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের পঁচা তেলাপিয়া মাছ খাওয়ানো হয়। সোলেমান বাদশার মালিকানাধীন আলমগীর ব্রাদার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান খাবার সরবরাহের ঠিকাদার। নিম্মানের খাবার পরিবেশনের বিষয়টি সাংবাদিকরা পরিচালক মহোদয়কে জানিয়েছেন। এ অভিযোগেই পরিচালক মহোদয় পরিদর্শন করেছেন। এসময় নানা অনিয়ম নিয়েও কথা বলেন তিনি।

সূত্রঃ সিভয়েস

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *