নিরাপদ সড়ক ভাবনা
সড়ক যেন কারও শেষ গন্তব্য না হয়—এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা দেখেছি, কেবল প্রতিবাদ আর ক্ষণস্থায়ী আন্দোলনই যথেষ্ট নয়, বরং প্রয়োজন পরিকল্পিত, সময়োপযোগী ও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ। নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কমিটির পক্ষ থেকে আমরা কিছু বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে চাই, যা দীর্ঘমেয়াদে সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
প্রথমেই চালকদের মানসিকতা ও জ্ঞানের পরিবর্তন প্রয়োজন। লাইসেন্স যেন আর শুধুই কাগজে-কলমে না থাকে। চালকদের জন্য বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে পরীক্ষামূলক মূল্যায়ন ও মনোবৈজ্ঞানিক কাউন্সেলিং চালুর দাবি জানাই। লাইসেন্স নবায়নের আগে আবশ্যকভাবে রিফ্রেশার কোর্স থাকা উচিত।
দ্বিতীয়ত, সড়কের নকশা ও নির্মাণে পরিকল্পনার অভাব চোখে পড়ে। অপরিকল্পিত ফ্লাইওভার, সংকীর্ণ ইউটার্ন ও দুর্গম মোড়গুলো প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। এগুলোতে সঠিক লাইটিং, চিহ্ন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতে হবে। বিশেষ করে স্কুল, হাসপাতাল ও জনবহুল এলাকায় জেব্রাক্রসিং, স্পিডব্রেকার ও সিসিটিভি নিরীক্ষা বাড়ানো দরকার।
তৃতীয়ত, পুরাতন, ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। যেসব গাড়ি কার্বন নিঃসরণ ও যান্ত্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নয়, সেগুলোর চলাচল বন্ধ করতে হবে। জনসচেতনতা গড়তে গণমাধ্যম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে। আমরা চাই, সড়ক যেন মৃত্যুকূপ নয়, বরং গন্তব্যে পৌঁছানোর নিরাপদ সেতু হয়। একটি সুশৃঙ্খল, পরিকল্পিত, ঝুঁকিমুক্ত সড়ক ব্যবস্থা গড়তে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
হৃদয় মুহুরী
সদস্য সচিব, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, চট্টগ্রাম জেলা