বৃদ্ধা মায়ের খবর নেয় না ছেলে, বাঁচার তাগিদে ভিক্ষা করে!

তাফহীমুল ইসলাম(বাঁশখালী টাইমস): বৃদ্ধা হাফিজা খাতুন। স্বামীর নাম মৃত পুতন আলী। বয়স আশি ছুঁইছুঁই।। বাড়ি বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ি ইউনিয়নের চেচুরিয়া গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডে (আলি বাবুর্চির বাড়ি)।

এ বয়সেও ভিক্ষার থলেই তার বেঁচে থাকার
একমাত্র অবলম্বন। বেশির ভাগ সময় দিন কাটাতে হয় অনাহারে। তার এক ছেলে। সে মায়ের কোনো খোঁজখবর নেয় না। তাই পথে নেমে ভিক্ষা করতে বাধ্য হয় হাফেজা।

গত ১০ অক্টোবর সকাল ১১টায় পূর্ব চেচুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভিক্ষা করতে আসেন তিনি। স্কুলের শিক্ষক কবি জুবাইর জসীম তার ভিক্ষা করার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান- তার অসহায়ত্বের কথা। পিতা-মাতার ভরণ পোষণ আইন ২০১৩ এর ৫ ধারা (১) অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করলেও তা নানা সমস্যার কারণে প্রয়োগ হচ্ছে না। যে কারণে এই বয়সে এসেও হাফিজা খাতুনের মতো মায়েদের পেটের দায়ে পথে নামতে হয় বৃদ্ধ বয়সে এসেও। কবি জুবাইর জসীম হাফিজা খাতুনের জীবনের করুণ কাহিনী তুলে ধরে সেদিন ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। তা পড়ে চেচুরিয়া গ্রামের খন্দকার পাড়া নিবাসী বর্তমান দুবাই প্রবাসী সাইফুল্লাহর মন জ্বলে ওঠে। তিনি জুবাইর জসীমকে ফোন দিয়ে হাফিজা খাতুন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন। জুবাইর জসীম তাকে যতটুকু সম্ভব বৃদ্ধার জীবনের করুণ কাহিনী সম্পর্কে জানান। পরের দিন (১১.১০.১৭) সাইফুল্লাহ বিকেলে জুবাইর জসীমের বিকাশ নম্বরে ৪৫০০ টাকা পাঠিয়ে দেন ওই মহিলার জন্য। জুবাইর জসীম টাকাগুলো তুলে একই বাড়ির ড্রাইভার ছৈয়দুল হককে সঙ্গে নিয়ে বৃদ্ধা মহিলার হাতে উক্ত ৪৫০০টাকা তুলে দেন।

এতে খুশিতে আত্মহারা বৃদ্ধ হাফিজা খাতুন। খুশি হলেও এই টাকা দিয়ে হয়তো মাস দুয়েক সাচ্ছন্দে জীবন যাপন করতে পারবে সে। এর পরে তাকে আবারও থলে হাতে ঘুরে বেড়াতে হবে মানুষের দুয়ারে, স্কুলের বারান্দায়।

বাঁশখালী টাইমসের সাথে আলাপকালে কবি জুবাইর জসীম জানান- “বৃদ্ধা মহিলা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা কিছুই পান না। তার করুণ কাহিনী যেকোন বিবেকবান মানুষের হৃদয় নাড়া দেয়ার মতো।”

সমাজের বিত্তবানরা যদি বৃদ্ধা মা হাফিজার পাশে এসে দাঁড়াতেন তাহলে তার বাকী জীবন হতো সুখের, আনন্দের। তাই সাইফুল্লাহর মতো আপনারাও মানবতার খাতিরে যে যার সাধ্যানুযায়ী এগিয়ে আসুন।
এই বিকাশ নাম্বারেও (০১৮১৪ ৮৯ ৬৭ ৩৮) পাঠাতে পারেন আর্থিক সহায়তা।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *