রামুর জিন্নাত আলীই কি বাংলাদেশের দীর্ঘতম ব্যক্তি!

বাঁশখালী টাইমস: বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা জীবিত মানুষ তুরস্কের সুলতান কসেন। তার উচ্চতা ৭ ফুট ৯ ইঞ্চি। তিনি ১৯৮২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বর গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাকে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘকার ব্যক্তিত্ব স্বীকৃতি দিলে রাতারাতি তারকা বনে যান কসেন বা কোসেন। পিটুইটারি গ্রন্থিতে একটি টিউমারের কারণেই সুলতানের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। আর এ কোসেনের মত বা তার চাইতে আরো সামান্য লম্বা আরেক তারকা সন্ধান মিলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এক অঞ্চলে। অজপাড়া গাঁয়ের এই লম্বা মানুষটি কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলাধীন গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল গ্রামে বাস করেন। তার নাম জিন্নাত আলী। বয়স ১৯ ছুঁই ছুঁই। তার পিতা আমির হামজা। পেশায় কৃষক। বাংলাদেশ নয় শুধু, ধারণা করা হয় সে বিশ্বের সবেেচয়ে লম্বা মানুষ কিনা ! তার বর্তমান উচ্চতা ৮ ফুট ৫ ইঞ্চি অধিক।
জানা যায়, ভোলার জেলার লাল মোহন উপজেলার এলজিইডি অফিসের নৈশ প্রহরী মুসলে উদ্দিন তার উচ্চতা ৭ ফুট ৭ ইঞ্চি। মাত্র দেড় ইঞ্চির জন্য তিনি গিনেজ ওয়াল্ড বুকে নাম লেখাতে পারেনি। তবে রামুর গর্জনিয়ার বাসিন্দা জিন্নাত আলী তার চেয়েও অধিক লম্বা। তাই ধারণা করা হচ্ছে জিন্নাত আলী বাংলাদেশের সবচেয়ে লম্বা ব্যক্তি।
মা শাহাফুরা বেগম জানান, ছেলে লম্বা হওয়ার কারণে খাদ্য জোগানও দিতে হচ্ছে বেশি। শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। মাথায় টিউমার, ডান পায়ে ঘা হয়ে পচন ধরেছে। এক পাও আরেক পায়ের চেয়ে দুই ইঞ্চি খাটো হয়ে যাচ্ছে। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাও সম্ভব হচ্ছে না। তাদের পরিবারে ভিটে মাটি ছাড়া আর কোন অর্থ সম্পদও নেই।
পিতা আমির হামজা জানান, ছেলে লম্বা হওয়ার কারণে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়াও মুশকিল হয়ে দাড়িয়েছে। রিক্সা, সিএনজি, মাইক্রো, জীপ গাড়িতে বসানো যায় না। চিকিৎসার জন্য গত এক বছর আগে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের নেওয়ার পর ব্যয়বহুল টাকার প্রয়োজন হওয়ায় চিকিৎসার অভাবে আবারো বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে লম্বা মানুষটির শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে।
গতকাল এই প্রতিবেদক সরজমিনে তার বাড়িতে গিয়ে মা-বাবা ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বয়স মাত্র ১৯ বছর। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সে আরো লম্বা হয়ে যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি তাকে আক্রান্ত করায় বর্তমানে তেমন একটা নড়াচড়া ও কোন ধরনের কাজ করতে পারছে না। এলাকাবাসীর দাবি এই লম্বা মানুষটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম জানান, ছেলেটির বয়স কম হলেও সে অনেক লম্বা হয়ে গেছে। পরিবারের পক্ষে তার শরীরের দুরাবস্থা নিয়ে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।

সূত্র: আব্দুর রশিদ, বাইশারী: কক্সবাজার নিউজ

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *