হালাল-হারাম চিনে রাখুন

ইসলামী ডেস্ক:কুরআনে হালাল খাওয়ার নির্দেশ

 

হালাল এবং হারাম নির্ধারিত করার ক্ষমতা মহান আল্লাহ তাআলা ব্যতিত আর কারো নেই। শয়তানের অনুসারী হয়ে আল্লাহর নির্ধারিত হালাল বস্তুকে হারাম করা সীমা লংঘনের শামিল। যেমনটি আরবের পৌত্তলিক ও মুশরিকরা করতো। তারা তাদের মূর্তির নামে উৎসর্গীকৃত জন্তু থেকে কোনো উপকার গ্রহণ করা এবং ভক্ষণ করা নিজেদের জন্য হারাম করে নিত। আল্লাহ তাআলা কুরআনে নির্দেশ দিচ্ছেন যে তোমরা শয়তানের অনুসরণ করে আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত হালাল বস্তু ভক্ষণ করা থেকে নিজেদেরকে বিরত রেখ না। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা  বলেন-

 

‘হে মানব জাতি! পৃথিবীতে যে সকল হালাল ও পবিত্র খাদ্যবস্তু রয়েছে; তা থেকে তোমরা আহার করো। এবং শয়তানের দেখানো পথ অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।

——-(সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৬৮)—–

 

পূর্ববর্তী আয়াতে আল্লাহ তাআলার নির্দেশিত পথে না চলার কারণে কিয়ামতের দিন তাঁর শাস্তি দেখে অবিশ্বাসীদের  আফসোস ও অনুশোচনা উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআন হাদিসের বাণী গ্রহণ না করে তারা দুনিয়ায় অবিশ্বাসী নেতাদের কথা মতো চলার কারণেই তারা কিয়ামতের দিন আফসোস করে বলবে- হায়! এদের কথামতো উপাসনা-পূজা করে কত বড় জঘন্য ভুল করেছি! সেখানে যে আফসোসের কোনো মূল্য নেই।

 

এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর উদ্দেশ্যে ঘোষণা করছেন যে, তোমরা আল্লাহ তাআলা কর্তৃক বৈধ ও পবিত্র খাদ্যদ্রব্য ভক্ষণ করো। কোনো ভাবেই শয়তানের অনুসরণ করিও না। অর্থাৎ যারা আল্লাহ তাআলা পথে চলে না; কুরআন সুন্নাহ মোতাবেক চলে না তাদের কথা মতো হালাল কাজকে হারাম মনে করে তা থেকে বিরত থাকা আবার আল্লাহ কর্তৃক হারাম কাজকে হালাল মনে করে তা করতে থাকা মারাত্মক অন্যায়।

 

গৃহপালিত পশুপ্রাণীকে দেব-দেবির নামে ছেড়ে দিয়ে তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং এগুলো জবেহ করে খাওয়াকে হারাম মনে করা অবৈধ। কেননা আরবের পৌত্তলিকরা তাদের দেব-দেবির নামে গৃহপালিত পশু এ বিশ্বাসে ছেড়ে দিতো এবং এটাকে মহাপূণ্যের কাজ মনে করতো। শুধু তাই নয়, দেব-দেবির নামে উৎসর্গীকৃত এ সকল পশুকে সম্মান করে নিজেদের জন্য তা হারাম করে নিত। এ জন্য আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করেন।

 

অন্য বর্ণনায় এসেছে, এ আয়াত হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু এবং তাঁর সঙ্গীদের ব্যাপারে নাজিল হয়েছে, যখন তাঁরা উটের গোশ্তকে নিজেদের জন্য হারাম বলে মনে করেছেন। কেননা ইয়াহুদিদের ধর্মে উটের গোশ্ত খাওয়াকে হারাম মনে করা হতো।

 

হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আমার সকল বান্দাদেরকে একনিষ্ঠ (মুসলমান) হিসেবে সৃষ্টি করেছি। তারপর তাদের নিকট শয়তান এসে তাদেরকে দ্বীন থেকে বিচ্যুত করে দেয়। আমি যে সকল জিনিস তাদের জন্য হালাল করেছিলাম; সে সকল জিনিস তাদের জন্য হারাম করে দেয়। (মুসলিম)

 

পরিশেষে….

পূর্ববর্তী আয়াতে কুরআনের বিধান না মানার পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কুরআনে সুস্পষ্টভাষায় কঠিন শাস্তির কথা তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলার বিধান পালনে হালালকে হালাল মেনে, হারামকে হারাম মেনে সঠিক পথে চলা এবং শয়তানের অনুসরণ না করাই ঈমানদারে একমাত্র কাজ।

 

আল্লাহ তআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার সকল হালাল বস্তু আহারসহ তাঁর সকল বিধি-বিধানের প্রতি তাঁর আনুগত্য প্রদর্শনের পাশাপাশি কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী যাবতীয় কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *