মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের : কালীপুর ইউনিয়নের জঙ্গল গুনাগরি ১নং ওয়ার্ডের এক বিধবা স্ত্রী লোক সহ ২টি পরিবারের দীর্ঘদিনের চলাচলের একমাত্র পথটি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জঙ্গল গুনাগরি গ্রামের মৃত পিকুল ধর এর স্ত্রী ঊষা ধর, মৃত ফনিন্দ্র দাশ এর ছেলে প্রদীপ দাশ ও নিরঞ্জন ধরের ছেলে রতন ধরের পরিবারের একমাত্র দীর্ঘদিনের চলাচলের পথটি বন্ধ করে দিয়েছে একই গ্রামের প্রতিবেশী প্রভাবশালী শুধাংশু ধর এর ছেলে প্রফেসর সজল ধর।
১৯৮১ সাল থেকে তারা বসতি স্থাপন করে আসছে উক্ত গ্রামে। পরিবার গুলোর দীর্ঘ ৩৬ বছরের একমাত্র চলাচলের পথটি জোর খাটিয়ে বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রভাবশালী প্রফেসর সজল ধর। বিগত দু এক মাস থেকে বিধবা ঊষাধরের পরিবার সহ গৃহবন্ধী হয়ে পড়ে। এতে না পারছে তারা বাড়ী থেকে বের হতে, না পারছে ছেলে মেয়েরা স্কুল-কলেজে যেতে। অসহায় দরিদ্র পরিবারের একমাত্র দীর্ঘ দিনের চলাচলের ১৭৬ ফুট দীর্ঘ পথটি পাকা দেওয়াল তোলে বন্ধ করে দেয়। এমনকি সজল ধর পথের উপর দিয়ে দিনাদিন পাকা বাড়ী নির্মান করে পথের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। উষাধরেরা যখনই বসতি স্থাপন করে মালিক পক্ষ থেকে জায়গা ক্রয় করেছিলো তখন দলিল সূত্রে উল্লেখ থাকে বর্তমান বন্ধ করে দেওয়া পথটি তাদের ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত। এবং এটিই এককমাত্র তাদের চলাচলের পথ। অভিযুক্তরা বলেন জায়গা ক্রয় করে বসত ঘর বেধে সেই থেকে বসবাস ও ভোগদখল করে আসছেন। জায়গা ক্রয়ের পর থেকে সেখানে একটি পথ ছিল। পরবর্তীতে সজল ধর প্রভাব বিস্তার করে পথটি বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে পথের উপর টিনের ছাউনি ও ইটের গাঁথুনি দিয়ে একটি এক চালা ঘর নির্মান করে পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। নির্মিত ঘরটির ৫ গজেরর ব্যবধানে দেওয়াল তুলে পথটিকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়। এমন আচরণে বিধবা ঊষা ধর বাধা দিলে তাকে মারধরসহ জীবন নাশের হুমকি এমনকি বাড়ী ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকিও দেন এবং তাদের বিরোদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে নানান ভাবে হয়রানি করে।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে স্থানীয় রঞ্জিত দে এর স্ত্রী মাধবীদে, কাজল দাশ এর স্ত্রী আরতি দাশ, মৃত সুরুেন্দ্র কর্মকার এর ছেলে মধুসূদন কর্মকার, মৃত আসহাব উদ্দীনের পুত্র আইয়্যুব আলীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, আমরা এলাকাবাসী সকলেই উক্ত গরীব অসহায় বিধবা নারী ও তার ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করে আমরা তাদের পক্ষে সত্য কথাটি বলি। কিন্তু অভিযুক্ত প্রফেসর এ এলাকার যে কোন নারী-পুরুষ বিধবা নারীর পক্ষে সত্য কথা বলায় অনেককে মামলা দেয়। তারা আরো বলেন, জোর খাটিয়ে গরীব লোকদের উপর এমন অত্যচার আগে কখনো দেখিনি। দীর্ঘদিনের চলাচলের পথটি বন্ধ করে দিয়ে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়তে হয়েছে তাদের কে। এমনকি তাদেরকে বাড়ী ছাড়ার জন্য জীবন নাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
অন্য দিকে একই এলাকার বাসিন্দা ডলমপীর মাদ্রাসার অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক অাশরফ আলী (৭৪) জানান, এই এলাকায় একমাত্র সজল ধর ছাড়া কোন হিন্দু থাকতে পারবেনা, সবাইকে পুড়িয়ে মারার হুমকী দেয় তিনি এলাবাসীকে। তিনি পিকুল ধরের বিধবা স্ত্রী ঊষা ধরকে মারধর করে চলাচলের পথ দখল করে ঘর নির্মাণ করে। এমনকি আবুল হোসেন এর পুত্র আহমদ হোসেন প্রকাশ আব্দু শুক্কর (৬০) অভিযুক্ত সজলের পক্ষে হুমকি দেন, এই এলাকাকে সাধনপুরের ১১ হত্যাকান্ডের মত সবাইকে জালিয়ে দেওয়া হবে।
বর্তমানে ওই বিধবা নারী তার অসহায় ছেলে মেয়েদের নিয়ে চরম আতংকে দিন যাপন করছেন। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কালীপুর ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফিরোজ মিয়া জানান, আমি এই বিচারটি অনেকবার করেছি। উক্ত জায়গাটি মহন মল্লীকের কাছ থেকে বিএস দাগ নং ১২৮ জায়গার পরিমান ৩০শতাংশ বা ১৫ গন্ডা জায়গাটি শুধাংশু ধর ক্রয় করে। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবৎ সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করে দেখেছি উক্ত জায়গাটিতে ৩ কড়া জায়গা বেশী আছে। মোহন মল্লীক জায়গাটি বিক্রি করার সময় দলিলে স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে যে উক্ত জায়গার পূর্ব পাশে চলাচলের পথটি কোন কিছুতেই বন্ধ করা যাবেনা। কিন্তু সজল রাস্তাটি তার বাড়ির পশ্চিম পাশে বিকল্প ভাবে নতুন করে চালু করতে চাইলে ও উক্ত রাস্তাটির মুখে রয়েছে অন্য জনের বসত ঘর ও দোকান।
সে কারনে পড়ে যায় বাঁধা, আমরা জায়গাটি পরিমাপ করে একটা সিদ্ধান্তে পৌছি যে পুরাতন রাস্তাটির পূর্বে নতুন করে ওই ৩ পরিবারকে রাস্তা করে দিতে। তবে সে সিন্ধান্তে প্রফেসর সজল তা মানেন নি।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী রামদাশ মুন্সির হাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই সুজন জানান,উক্ত জায়গাটা নিয়ে অনেক মারামারি হয়েছে,মামলা মোকদ্দমা ও হয়েছে, অনেকে জেল হাজতে ও গিয়েছে, সর্বশেষ মামলাটি আদালতে চলমান রয়েছে।তবে কোন ধরনের আইন শৃংঙ্খলার অবনতি যাতে না ঘটে সে দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারী রাখা হয়েছে।