শীতকাহন
কমরুদ্দিন আহমদ
পৌষের তাড়া খেয়ে শব্দরা কম্বলের ভেতর
উম খুঁজছে _ সদ্য ডিমের খোলস থেকে বেরিয়ে আসা
চোখ ফোটার আগেকার পায়রা ছানার মতো।
আমি কবিতা লিখতে বসে শব্দপ্রিয়াকে খুঁজতে খুঁজতে
অগত্যা বেরিয়ে পড়ি নতুন চরের তরমুজ ক্ষেতের দিকে
বিকেল চারটায়…
তখনো রবিশষ্যের দৃষ্টিনন্দন সবুজশব্দরা
ধোঁয়ার কুণ্ডুলি পড়ে হয়ে আছে আশ্চর্য ধূসর
শান্তনদীর জলজশব্দকে বালতি ভরতে গিয়ে
থমকে দাড়াই
আমার প্রতিদিনের শব্দ ধূলির বাষ্প হয়ে উড়ছে
খুঁজে পাই না হৃদয়ে বহমান নদী ।
আজ অপহৃত সূর্যের আলো, রোদ ও তাপের জন্য
কাঁদছে বৃক্ষ, ঘাস, পাতাপাতালি
উত্তরী হাওয়ায় কাঁপছে গর্তের ভেতর
শিয়াল, সজারু,খরগোসশাবক
নিদ্রাহীন মৎস্যরাণীরাও যেন জলের তলে
অদ্ভূত ডিপ-ফ্রিজে ঘুমায় ।
তরমুজ ক্ষেতের পাশে নাড়া আর খড়কুটো
জোগাড় করে আগুন জ্বালাতেই
শেয়ালেরা হুক্কাহুয়া ডাকে একযোগে
স্লোগান দিয়ে এগিয়ে আসছে শরীর উম করতে;
ভয়ে কম্পমান তরমুজের কোমল বাচারা ।
আমি শেষ পর্যন্ত কম্বলের ভেতর
কবিতার শব্দ সংগ্রহে চললাম।
ওকম্বল! ওগোলাপ পাপড়ি_
ওশানুদেশ! ওনতুন চর, কোমল ঘাস,
ও ‘ মোহনা_
ফিরিয়ে দাও উষ্ণতা, গলিয়ে দাও তুষার
জলের ধারায় শুদ্ধকরো শব্দরাজি
মধুর ধ্বনিগুচ্ছে শীতার্ত হই ।