আমরা কিসের বড়াই করি??
 শুনুন তবে-
 ২২ নভেম্বর।
 ১৯৬৩ সাল।
 সকাল আটটা।
 প্রেসিডেন্ট কেনেডি হোটেল টেক্সাসে নাস্তা করলেন।
 তারপর রওনা দিলেন এয়ারপোর্টে।
 গাড়িতে এক ঘন্টার পথ ডালাস।
 কিন্তু ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকার প্রেসিডেন্ট গাড়িতে চড়বেন, তা হয় না।।মাত্র ১৫ মিনিটে তিনি এয়ারফোর্স ওয়ানে চড়ে ডালাস নামলেন সকাল ন’টায়।
 রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ।
 শত শত সিকিউরিটি।
 বিশাল গাড়ির বহর।
 প্রেসিডেন্ট যাচ্ছেন, দুনিয়ার সবচে’ ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট।।।
 তাই শান শওকত বর্ণনা করার দরকার নাই।
বিশাল শোভাযাত্রা শুরু হলো।
 কেনেডি বসা ছাদ খোলা গাড়িতে।
 সকাল এগারোটায় তাঁকে গুলি করা হলো।
 খুলি উড়ে যাওয়া রাষ্ট্রপতি হুমড়ি খেয়ে পড়লেন পাশে বসা স্ত্রী জ্যাকুলিন কেনেডির কোলের উপর।
সেদিন সন্ধ্যায় কেনেডি আবার এয়ারফোর্স ওয়ানে ফেরত গেলেন।
 তবে কফিন বন্দী হয়ে।
 তাঁর জায়গা এই বিখ্যাত প্লেনের প্রেসিডেন্সিয়াল সুইটে হলোনা।
 কারণ সেখানে তখন নতুন প্রেসিডেন্ট জনসন।
 সকালেও তিনি ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। কেনেডি তাঁর বাড়িতে যাওয়ার জন্যই ডালাস এসেছিলেন।
 সংবিধান অনুযায়ী তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন।
 কেনেডির জায়গা হলো প্লেনের পেছনে।
 একা।
 পাশের সিটে শুধু তাঁর স্ত্রী।
একা।
 একা।
 সকালের সবচে’ ক্ষমতাবান মানুষটি শুয়ে আছেন একা।
তাঁর সমস্ত প্রটোকল ট্রান্সফার হয়েছে নতুন প্রেসিডেন্টের দিকে।
এভাবেই চলে যায়।
 আজকের ক্ষমতা কাল চলে যায়।
 সকালেরটা বিকালে যায়।
লেখক: বাদল সৈয়দ
(কবি ও ঔপন্যাসিক এবং বাংলাদেশ সরকারের একজন স্বনামধন্য কর কমিশনার)

