ক্লায়েন্ট ভিজিট করতে গিয়ে আবু আহমেদ সাহেবের সাথে আমার পরিচয়। বয়স পয়ষট্টির মতো হবে। মাথায় সবসময় টুপি থাকে। দাড়ি দেখেই বোঝা গেল আগে নিয়মিত শেভ করতেন। হয়তো কিছুদিন আগে থেকে দাড়ি রেখে দিচ্ছেন। একটা বহুজাতিক কোম্পানিতে স্টোর- কিপারের দায়িত্বে ছিলেন। বছরখানেক আগে রিটায়ার্ড হয়েছেন। বত্রিশ বছর ধরে ভাড়া বাসায় থাকছেন। রিটায়ার্ডের পর বেশকিছু টাকা কোম্পানি থেকে পেয়েছেন, সচরাচর অন্যরা যেমন পেয়ে থাকে। এই টাকা পাবার পর থেকে উনার ইচ্ছে হল একটা ফ্ল্যাট নেবেন। ভাড়াবাসা ছেড়ে দেবেন। বিভিন্ন জায়গায় অনেক ফ্ল্যাট দেখেছেন, উনার পছন্দ হলেও স্ত্রীর পছন্দ হয় না। যত ফ্ল্যাট দেখেছেন প্রত্যেকটাতে একটা না একটা কারণে উনার পছন্দ হয় না। সর্বশেষ যে ফ্ল্যাটটা দেখেছেন তাতে বেডরুম থেকে শুরু করে ডাইনিং, লিভিং, বাথরুম, এমনকি বেলকনি পর্যন্ত মনমতো হয়েছিল। কিন্তু বিপত্তি ঘটল কিচেন নিয়ে। কিচেন নাকি খুব ছোট, আর তাতে নাকি জিনিস-পত্তর রাখার তাক নেই। এটা বলার পরপরই আবু আহমেদ সাহেব বললেন, শুধু এই একটা কিচেনের জন্য ফ্ল্যাট নেবে না?
বাজারে আজকার কতো ধরনের প্লাস্টিকের তাক পাওয়া যায়, ওখান থেকে একটা এনে কিচেনে জায়গামতো বসিয়ে দেবো। না, তাতেও নাকি হবে না। উনার এটাচড্ִ তাক লাগবে। একমাত্র স্ত্রীর কারণে উনার ফ্ল্যাট নেওয়া হচ্ছে না। আমি অইদিনের মতো চলে আসি। আসার সময় উনি বললেন, বাবা, তোমাকে অনেক কষ্ট দিচ্ছি। আমি বললাম, না আন্কেল, কী বলেন! আমার কোনও কষ্ট হচ্ছে না। কষ্ট সব তো আপনার হচ্ছে। একদিকে আন্টিকে মানাতে পারছেন না, আরেকদিকে এই বয়সে বিভিন্ন জায়গা ফ্ল্যাট দেখতে গিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। তিনি বললেন, আমি তোমাকে পরে ফোন দিয়ে জানাবো। এই লাইনে হয় কী, বেশির ভাগ প্রোসপেক্ট ক্লায়েন্ট বলে যে আমি ফোনে জানাবো। কিন্তু জানানো আর হয় না। মার্কেটিংয়ে লোক আবার ফোন দিলে পরে উনাদের মনে পড়ে! তখন উনি আবার কথা বলেন, সময় নেন অথবা উনার কোনও একটা সমস্যার কথা বলেন। মার্কেটিংয়ে থাকা লোকদের এজন্য ত্যাদড় টাইপের অথবা জোঁকের মতো হতে হয়। কিন্তু এই লোকটাকে দেখে আমার সেরকম মনে হয়নি। উনি অনেকটা সহজ-সলল, সিধে-শান্ত টাইপের।
আমাকে বললেন, বাবা, দাঁতব্যথার কারণে আমি ডাক্তারের চেম্বারে যাচ্ছি। তোমাকে পরে ফোন দেবো, তোমার সাথে কথা আছে। উনার মুখে ” তোমার সাথে কথা আছে” শুনে খুব খুশি লাগল আমার। হয়তো একটা ফ্ল্যাট বিক্রি হয়ে যাবে। দুই বছর আগেও রিয়েল এস্টেট ব্যবসা খুব রমরমা ছিল। একমাসে একজন মার্কেটিং অফিসার পাঁচ-ছয়টা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারতো। এখন সেই অবস্থা আর নেই, একমাসে একটা ফ্ল্যাট বিক্রি করতে পারলেই যেন অনেককিছু। গত দুইমাস ধরে আমার কোনও বিক্রি নেই, তাই এই মুহূর্তে একটা ফ্ল্যাট বিক্রি আমার জন্য খুব জরুরি। আবু আহমেদ সাহেবের এই কথায় তাই আমি কিছুটা আশ্বাস পেলাম। এর দুইদিন পর উনি আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, তুমি কি আমার বাসায় আসতে পারবে? আমি বললাম, হ্য্ঁা। উনি উনার বাসার ঠিকানা দিলে আমি খুঁজে-খুঁজে পৌঁহে গেলাম। বাসার সামনে গিয়ে আমি উনাকে ফোন দিলে উনি বললেন, তুমি একটু দাঁড়াও, আমি আসছি। মিনিট পাঁচেক পরে তিনি এলেন। আমাকে নিয়ে হাঁটা শুরু করলেন। আমি মনে করেছি, উনি আমাকে উনার বাসায় নিয়ে গিয়ে কথা বলবেন।
যদিও অপরিচিত কারও বাসায় যেতে আমার অস্বস্থি লাগে। যাদের বাসায় যাব তাদের বউ-ঝিকে আবার আমার জন্য চা-নাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে। সেটার ব্যবস্থা করতে গিয়ে হয়তো নিজে-নিজে বলে বসবে, ধুর, কোথা কার কে এসে আবার অসময়ে ডিস্টার্ব করে, যত্তোসব। হয়তো এইকথা সবাই বলে না, তবুও আমার মনে হয় সবাই মনে-মনে এইকথাই বলে। তাই কারও বাসা যাওয়া পড়লে আমি আগেভাগে বলেই দি-ই যে, আমি চা-নাস্তা করব না। হাঁটতে- হাঁটতে তিনি বললেন, আমি একটা পারিবারিক সমস্যায় আছি। আমি বললাম, কী সমস্যা? আন্টির সাথে ফ্ল্যাট নেয়া না-নেয়া নিয়ে ঝগড় হলো নাকি? তিনি বললেন, আরে না, তুমি বেশি কথা বলো! ওমা! উনার সাথে এখনও তেমন একটাই বলিনি, আর উনি বলছেন, আমি বেশি কথা বলছি! স্ত্রীকে হয়তো উনি খুব ভালোবাসেন, আমি উনাদের মাঝে ঝগড়া হয়েছে কি না জানতে চাওয়াতে বিরক্ত হয়ে এ-কথা বলে থাকতে পারেন।
এমনিতে আমার ম্যানেজার আমাকে প্রায়ই বলেন, আপনি খুব কম কথা বলেন। মার্কেটিংয়ের জন্য কম কথা বলা লোক পারফেক্ট না, চাপার জোর লাগে। আমি চুপ মেরে থাকি। যে-কথা বলা দরকার সেকথাই তো বলি, অনেক সময় বেশি কথা বললেও ক্লায়েন্ট বিরক্ত হয়, তখন হিতে বীপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। উনি বললেন, সমস্যাটা আমার মেয়েকে নিয়ে। – আপনার মেয়ে কীসে পড়ে? আমার প্রশ্ন শুনে উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আরে, আমার মেয়ে বিবাহিত, ওকে নিয়ে ঝামেলায় আছি। আমি ভেবেছি, উনার মেয়ে ইশকুল-কলেজে পড়ে, মেয়ের প্রেম-টেম জাতীয় কোনও একটা সমস্যা আছেন। আজকার ইশকুল- কলেজপড়ুয়া ছেলে- মেয়েদের যা অবস্থা, কে কখন ছেলেবন্ধু বা মেয়েবন্ধুকে নিয়ে বাসা থেকে পালিয়ে যায় বোঝা মুশকিল। অথচ পালিয়ে যাওয়ার দু-চারদিন পরেই আবার ফিরে আসে, কান্নাকাটি করে, নিজের ভুল স্বীকার করে। কিন্তু তখন তার আসল জিনিসটাই হারিয়ে বসে, যার জন্য হাজারো আফসোসেও কোনও উপকার হয় না। ক’দিন আগে আমাদের বাড়ির পাশের এক মেয়ে মা-বাবার সাথে রাগ করে তার প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যায়। কিন্তু তিনদিনের মাথা আবার ফিরে আসে।
তার প্রেমিকের পরিবার নাকি এভাবে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা মেয়েকে ঘরে তুলবে না। অগত্যা সে নিজের বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়। টিনেজ সময়টাই এরকম, আবেগে ভাসাভাসি চলে কেবল। আবেগ দিয়ে যদি দুনিয়া চলত তাহলে অনেক অসাধ্য সাধন হতো। আবু আহমেদ সাহেব বললেন, আমার তিনটা মেয়ে, কোনও ছেলে নেই। আলহাম্দুলিল্লাহ, তিনটাকেই ভালো ঘরে বিয়ে দিয়েছি। বড় দুই মেয়ে বেশ ভালো থাকলেও ছোট মেয়েটাকে নিয়ে ঝামেলায় আছি। ওর জামাই কাতারে থাকে। তাই সে আমাদের বাসার পাশে বাসা নিয়ে থাকে। এত বছর কোনও সমস্যা ছিল না। গত বছর থেকে সে হঠাত বিড়াল পোষা শুরু করল। – বিড়াল পুষলে সমস্যা কী? ঘরে ইঁদুর-তিদুর থাকলে দূর হয়ে যাবে! – সমস্যা তো ইঁদুর নিয়ে না, আর তুমি শহরের বাসা-বাড়িতে ইঁদুর পাবে কোথায়? – তাহলে? – একসাথে দশ-বারোটা বিড়াল পোষে সে। – দশ-বারোটা? – তো বলছি কী! শুধু কি তা-ই? সে সারাদিন বিড়ালগুলো নিয়ে থাকে, ওদের সাথে নিয়ে খায়, চলাফেরা করে, এমনকি ঘুমায়ও ওদের সাথে। আর বিড়ালগুলোও ওর পিছু ছাড়ে না, লেগেই থাকে। যেন সে ওদের মা!
উনার কথা শুনে মায়া হলো, মন খারাপ হলো কিছুটা। উনাকে বললাম, ডাক্তার দেখাননি? তিনি বললেন, দেখিয়েছি, অনেক সাইকিটিস্টকে দেখিয়েছি, তারাও কিছু করতে পারল না। এদের মধ্যে একজনের চিকিৎসায় প্রায় ভালো হয়ে উঠেছিল, কিন্তু পরবর্তীতে আবার আগের মতো হয়ে যায়। ডাক্তার বলেছিলেন, আপনার মেয়ের ওপর স্কিজোফ্রেনিয়া, ম্যানিক- ডিপ্রেসিভ সাইকোসিস ইত্যাদির পূণরাক্রমণ রোধ করা যাচ্ছে না। যার ফলে সেরে ওঠার পরেও বারবার এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সে। মেয়েটা সারাদিন বিড়ালগুলো একবার আমার বাসায় আসে, আরেকবার ওর বাসায় যায়। সারাদিন এই কাজই করতে থাকে। মানুষের সামনে লজ্জায় পড়ে যাই। এসব কথা তুমি কাউকে আবার বলতে যেও না। যে জন্য তোমাকে ডেখেছি, আমি এই এলাকায় ফ্ল্যাট নিতে চাচ্ছি না, তোমাদের কি অন্য কোথাও আছে? আমি বললাম, হ্য্ঁা, আছে তো। আমি আমাদের ফ্ল্যাটগুলো লোকেশন উনাকে জানালাম। উনি বললেন, ঠিক আছে, একদিন গিয়ে দেখে আসবো। আমি এখানে আর থাকতে চাই না। আমি বললাম, আজকে চলেন, দেখে আসি।
– না বাবা, আজ পারবো না। তোমাকে বারবার কষ্ট দিচ্ছি আর কি!
– না, না, কিসের কষ্ট! উপরে কিসের কষ্ট বললেও মনে-মনে বললাম, ফ্ল্যাট কিনলে এই কষ্ট কোনও কষ্ট বলেই মনে হবে না। একটা ফ্ল্যাট বিক্রি করা খুব জরুরি হয়েছে, যদিও চাকুরি অনেক আগে কনফারমেশন হয়ে গেছে। কিন্তু এই কনফারমেশনের কোনও কনফারমেশন নেই, কোম্পানি চাইলে পনেরো দিন- এক মাসের সময় দিয়ে বিদায় করে দিতে পারে। বিক্রি না- থাকলে কেউ তো আর বসিয়ে-বসিয়ে বেতন দেবে না। নিজের কাছেও খুব খারাপ লাগে এভাবে বেতন নিতে। কাজ করছি, কিন্তু ফলাফল আসছে না। এই লাইনে একটা কথা প্রচলিত আছে, ” সেইল নেই তো বেইল নেই”। আসলেই সত্য। আসলে এই সেক্টরে খুব আশা নিয়ে এসেছিলাম, তখন রিয়েল এস্টেট কোম্পানির অফিসগুলোতে টাকা উড়ত! শেয়ারবাজার চাঙ্গা ছিল, এমএলএম কোম্পানিগুলোর দৌরাত্য ছিল, মানুষের হাতে একপ্রকার প্রচুর কাঁচা টাকা ছিল। এখন সেই সময় নেই, বলতে গেলে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। যাদের হাতে প্রচুর টাকা আছে তারাও এই সেক্টরে ইনভেস্ট করার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না।
বাড়িতে গেলে বা শহরের কোথাও পাড়ার শিল্পপতি বা বড় পোস্টে থাকা কারও সাথে দেখা হলে তারা কুশল জিজ্ঞেস করে। একবারও জানতে চায় না কী করি। কয়েকজনকে চাকরির জন্য বলেছিলাম। তারা বলে, এখন তো চাকরির বাজার খারাপ, দেখি, কোথাও পেলে জানাবো। অই জানাবোতেই শেষ, বছর পার হলেও জানানোর সময় আসে না। প্রতিবেশির কথা কী বলবো, নিজের ভাই পর্যন্ত অন্যের কাছে মুখ বেচতে হবে বলে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও মুখ ফুটে একটিবার বলে না! অথচ উনাদের সাথে বড়-বড় কতো শিল্পপতির পরিচয়! আবু আহমেদ সাহেবের কাছ থেকে আসার পর থেকে মনটাই খারাপ হয়ে গেল। উনার মেয়ের কথা ভাবতে লাগলাম, উনার কথা ভাবতে লাগলাম। অথচ আমার কথা কেউ ভাবে না, কী অফিস, কী আত্মীয়- স্বজন! আবু আহমেদ সাহেবের কাছ থেকে আসার পর এক সপ্তাহ উনার সাথে কোনও যোগাযোগ করিনি। এক সপ্তাহ পর উনি নিজে ফোন দিয়ে বললেন, তুমি কি ফ্রি আছো?
– কেন বলুন তো?
– তোমার কি আমার বাসার দিকে আসার সময় হবে? – আপনার বাসায় কী করবো?
– তোমাদের আরেকটা প্রোজেক্ট আছে না, তোমার আন্টি ওটা দেখতে চাচ্ছে।
– আচ্ছা, আমি আসছি।
এমনিতে বাইরে অন্ধকার হয়ে আছে, মনে হচ্ছে খুব বৃষ্টি হবে। তবু চলে গেলাম উনার বাসার সামনে। গুড়ি-গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে তখন। উনাকে ফোন দিলাম। উনি বললেন, পাঁচটা মিনিট দাঁড়াও, আমরা আস্ছি। উনার সাথে কথা শেষ করার সাথে-সাথে তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। আমি বাসার নীচে পার্কিয়ে এসে দাঁড়ালাম। সাথে-সাথে কোত্থেকে একটা কুকুর এসে পার্কিংয়ে আশ্রয় নিল। এই তুমুল বৃষ্টিতে কে বাইরে থাকতে চাইবে! মিনিট পাঁচেক পরে আবু আহমেদ সাহেব ও উনার স্ত্রী নামলেন। নামতে- নামতে বললেন, বাবা, বাইরে তো খুব বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টি থামুক, তারপর বের হবো। পেছন-পেছন উনার মেয়েও নামলো। উনার মেয়েকে আগে দেখিনি। সাথে দশ-বারোটা বিড়াল থাকাতে বুঝতে পারলাম এটাই উনার মেয়ে। সে নামার সাথে-সাথে আমার পাশে দাঁড়ানো কুকুরটা ঘেউ করে উঠল। আমি ভয় পেলাম খুব। কিন্তু আমার চেয়েও বোধহয় বেশি ভয় পেল মেয়েটা। সে চেঁচিয়ে উঠল। সাথে-সাথে কুকুরটা আবার ঘেউ-ঘেউ করে উঠল, এভাবে অনেকক্ষ ঘেউ-ঘেউ করল। ওদিকে মায়েটাও চিৎকার দিয়ে কুকুরের ঘেউ-ঘেউ ডাকের প্রতি উত্তর দিতে লাগল।
ততক্ষণে মেয়েটার সাথে থাকা বিড়ালগুলো যেদিকে পেরেছে ছুটে পালিয়ে গেল। কুকুর ও মেয়েটার কাণ্ড দেখে আমরা সবাই হতবাক! এ যেন কুকুর-বিড়ালের ঝগড়া! এদিকে বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে, থামার কোনও লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না। এক পর্যায়ে মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেল। আবু আহমেদ সাহেব ও উনার স্ত্রী দৌড়ে গিয়ে তাকে ধরে বাসায় নিয়ে গেল। আমিও উনাদের সাথে বাসায় উঠলাম। মিনিট দশেক পরে মেয়েটার জ্ঞান ফিরলো। আমি উনাকে বললাম, বৃষ্টি কিছুটা কমেছে, আমি যাই। আপনারা উনাকে সুস্থ করে তোলেন। পরে একদিন ফ্ল্যাট দেখবেন আর কি! উনি বললেন, বাবা, আমি তোমাকে বারবার কষ্ট দিচ্ছি। আমি মুখে হাসি রেখে চলে এলাম। এর দশদিন পরে উনি আমাকে ফোন দিলেন। খুব খুশি-খুশি ভাব, যেটা উনার কথা শুনে বুঝতে পারছি। কুশল জিজ্ঞেস করে আমাকে বললেন, বাবা, আমার মেয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ এখন, বিড়ালগুলো আর আসেনি। শুনে আমারও খুব খুশি লাগল। কী থেকে কী হয়ে গেল! উনি আরো বললেন, বাবা, আমার আর ফ্ল্যাট লাগবে না, আমরা আগামী মাসে এই বাসা ছেড়ে দিয়ে আমার মেয়ের ফ্ল্যাটে উঠতে যাচ্ছি।
লেখকঃ গল্পকার ও ছড়াকার