মুরশিদুল আলম চৌধুরীর কবিতা || নদী, ও-নদী

blank

নদী, ও-নদী

মুরশিদুল আলম চৌধুরী

একটি কবিতা অবতীর্ণ হবে বলে
কী আগ্রহে অপেক্ষা করছি আমরা!
শরীরে দুই প্রস্থ জোছনা দুলিয়ে
নতজানু হয়ে বসে আছ তুমি, উলঙ্গ ছাদে।
তোমার চোখ থেকে উছলে পড়ছে উচ্ছ্বাস;
দক্ষিণা হাওয়ায় থিরথির করছ তুমি।
তুমি হতে চলেছ প্রথম কবিতার জননী।
জোছনাকে সাক্ষী রেখে তুমি ঘোষণা করলে,
আমিই সেই কবিতার জনক।

মনস্বিতা, তোমার কি সেই রাতের কথা মনে পড়ে-
তুমি যখন হাওয়ায় বুকটা সোপর্দ করছিলে,
বৃষ্টির ছোট ছোট কণা তোমাকে স্পর্শ করেছিল,
শ্রাবণের দশমী, তবুও কেমন উষ্ণতা ছিল!
সেই উষ্ণতায় কবিতার বীজ বপন করেছিলাম আমরা।

এরপর কেটে গেল আরও জোছনা, আরও শ্রাবণ,
আজ আমাদের প্রতীক্ষার সেই সমাপ্তির রাত।
আমি চাই, উচ্চৈঃস্বরে অবতীর্ণ হউক কবিতা।
সেই গর্জনে মিশে যাক তোমার চিৎকার,
আমাদের কবিতার কান্নায় কেঁপে উঠুক জোছনা,
মেঘেরা বলাবলি করুক-
কেন এই কবিতা, কী এর বংশ-পরিচয়?

কী ভাগ্যবতী আমাদের কবিতা-
পৃথিবীতে এসেই জোছনা আর বৃষ্টির স্পর্শ পাবে।

মনস্বিতা, নিঃশব্দ পৃথিবীতে আজও সেই দশমী।
কী অবলীলায় প্রথম কবিতার জননী হলে তুমি।
রক্তাক্ত কবিতায় গড়িয়ে পড়ল তোমার অশ্রু;
জোছনা আর দক্ষিণা হাওয়াকে সাক্ষী রেখে
আমি কবিতার ললাটে চুম্বন এঁকে ডাকলাম-
নদী, ও-নদী!
কিঞ্চিৎ হেসে শিরোনামে সম্মতি দিয়ে তুমিও ডাকলে-
নদী, ও-নদী!

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *