তৈলারদ্বীপ ব্রীজের টোল বন্ধে দৃষ্টি আদালতের দিকেঃ ৭ দিন পর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

বাঁশখালী টাইমস: ২০ আগস্ট ২০১৭, রবিবার: পূর্বেকার টেন্ডারের সময়সীমা অনুযায়ী চট্টগ্রাম-বাঁশখালী সড়কের তৈলারদ্বীপ সেতু টোলমুক্ত হচ্ছে আজ রাত ১২ টায় বলে জানালেন সাবেক সাংসদ মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।

আজ ২০ আগস্ট রবিবার বেলা ১২ টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদ ইসলাম চৌধুরী বলেন, এটাও দক্ষিণ চট্টগ্রাম, চকরিয়া ও কক্সবাজারের মানুষের জন্য আরেক বিজয়। এখন অবশিষ্ট থাকল শুধু হাইকোর্টে জস্বার্থে করা রিটের পূর্ণাঙ্গ নিস্পত্তি। এরপর উচ্চ আদালতের এই আদেশ কার্যকর হবে। এতে বাঁশখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোকজন সুবিধা পাবে। সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গত ২ জানুয়ারি পত্রিকায় তৈলারদ্বীপ সেতুর ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিষয়টি নজরে এলে তিনি এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট মামলা করেন। উচ্চ আদালতে যুক্তি হিসেবে বলা হয়, শঙ্খ নদের ওপর দোহাজারি সেতু, চন্দনাইশ সেতু, সাতকানিয়ার ডলু সেতু ও খোদারহাট সেতু নির্মিত হয়েছে। এসব সেতু থেকে টোল আদায় হয় না। সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত প্রত্যাশা করে এ অঞ্চলের ৪০ লাখ মানুষ, অন্যতায় মানুষের রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। টোলমুক্ত তৈলারদ্বীপ সেতু প্রতিষ্ঠা হলে লাভ হবে মানুষের। ভাবমূর্তি বাড়বে সরকারের।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি শাহজাদা মো. আলী, সিএনজি শ্রমিক এসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুস সবুর, কোস্টার এসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন, পেকুয়া বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আবদুল বাকের, মো. আনছারুল আলম, কোস্টার মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনোয়ারা-বাঁশখালীর তৈলারদ্বীপ ব্রীজের ভিত্তি স্থাপন করেন। তবে ২০০৫ সালের শেষের দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ব্রীজটি উদ্বোধন করেন। তখন থেকেই সামনে আসে সাধারণ জনগণ ও গাড়ি চালক ড্রাইভারদের টোল আদায়ের যন্ত্রণা।

২০১৫ সালে থেকে প্রতিটি বাস ও সিএনজি অটোরিকশা থেকে একই হারে (১৫ টাকা) করে টোল আদায় করা হয় এবং বিভিন্ন সময় দেখা যায় ঠিকাদার কর্তৃক ড্রাইভারদের মারধরসহ নানানভাবে মাস্তান বাহিনী দিয়ে হয়রানির অভিযোগ। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত টোল আদায়কে কেন্দ্র করে ঠিকাদার ও সিএনজি চলকদের সাথে সংঘর্ষ প্রতিনিয়ত চলতে থাকে। পরবর্তীতে যানবাহন মালিক-শ্রমিকদের দাবির পরীপেক্ষীতে আমি সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ফোনে কথা বলি। মন্ত্রীর সঙ্গে ফোন করে সিএনজি অটোরিকশার টোল ৮ টাকায় নামিয়ে আনি। এটি টোলবিহীন ব্রীজ আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়। এবং পরবর্তীতে ঠিকাদার ও অন্যান্য রাজনীতিবিদরা এই রায়ের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার চেষ্টা করতে গেলে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী তা সঙ্গে সঙ্গে নাকচ করে টোল আদায় বন্ধ করার জন্য বলে দেন।

সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিগত ২ জানুয়ারি পত্রিকায় তৈলারদ্বীপ ব্রীজ পুনরায় ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এটি আমার চোখে পড়লে বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট মামলা করি। এখানে আমার যুক্তি হচ্ছে, শঙ্খ নদীর ওপর দোহাজারি ব্রীজ, চন্দনাইশ দোহাজারী ব্রীজ সাতকানিয়ার ডলু ব্রীজ নির্মিত হয়েছে। কোনো ব্রীজে কখনোই টোল আদায় করা হয়নি। ব্যতিক্রম হচ্ছে শুধু আমাদের আনোয়ারা-বাঁশখালীর তৈলারদ্বীপ ব্রীজের ক্ষেত্রে। এ ব্রীজ টি নির্মাণে কোনো বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানের প্রয়োজন হয়নি। সম্পূর্ণ দেশিয় অর্থায়নে এ সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। সুতরাং স্বাভাবিক নিয়মেই এ ব্রীজটিতে কোনো টোল তোলার সুযোগ নেই। বাঁশখালীবাসীর সাধার জনগণের পক্ষে আদালতে দায়ের করা রিট মামলা পরিচালনা করেন সাবেক এটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফ। মহামান্য হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার এবং এটিএম সাইদুর রহমানের বেঞ্চ ২০১৭-১৮ সালের জন্য ব্রীজ টির ইজারা প্রদান তথা টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ সব কার্যক্রম স্থগিত রাখার আদেশ দেন। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে টোল আদায় বন্ধ করে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সূত্র: নিউজগার্ডেন24

You May Also Like

2 thoughts on “তৈলারদ্বীপ ব্রীজের টোল বন্ধে দৃষ্টি আদালতের দিকেঃ ৭ দিন পর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

  1. বাঁশখালী বাসীর প্রানের দাবি হচ্ছে, অতিরিক্ত ভাড়া অাদায়ের বন্দের জোড়ালো দাবি।পি,এ, বি,মালিক সমিতির অধিনে চলিত বাঁশখালীর বাসগুলোর অতিরিক্ত ভাড়া অাদায়ে তীব্র প্রতিবাদ জান্নাচ্ছি। এবং সাথে সাথে উত্তর চট্রগ্রামের মত বিভিন্ন থানায় যেমনিভাবে যাত্রী কল্যাণ সমিতি অাছে। তেমনি ভাবে অামাদের বাঁশখালীতে ও একটি যাত্রী কল্যাণ সমিতি গঠন করা হোক।তাহলে বাঁশখালীতে সমস্ত দাবি অাদায় করা সম্ভব। শুধু ঢোল মুক্ত নহে, অতিরিক্ত ভাড়া অাদায়ের কথা ও সাংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হোক।তাহলে বাঁশখালী লাখো লাখো জনতা স্বস্তি ও জিম্মি হতে মুক্তি পাবে।

Leave a Reply to BanshkhaliTimes.com Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *