বাঁশখালীতে বিআরটিসি বাস বন্ধের নেপথ্যে…

ওয়াসিম আহমেদ : চট্টগ্রামের অনেকটা স্বয়ংসম্পুর্ণ ও সম্ভাবনাময় উপজেলা বাঁশখালী হওয়ার সত্ত্বেও অবহেলিত ছিলো সেই শুরুর থেকেই । তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত হয়েছে পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে । যখন বাঁশখালীর পার্শবর্তী উপজেলা গুলোতে বিআরটিসি সহ দেশের বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্টানের আরামদায়ক গাড়িতে ন্যায্য ভাড়ায় বাড়ি ফিরছে ঠিক তখনও বাঁশখালীর মানুষ লক্কর যক্কর ফিটনেসবিহীন গাড়িতে নির্ধারিত ভাড়ার তিন চার গুণ বেশি বাড়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে । পরিবহনে এহেন দৈনন্দিন ভোগান্তির সমাপ্তির ইতিহাস এখন শুধুই স্বপ্ন ।
লোকাল, স্পেশাল সার্ভিস , সুপার সার্ভিস ও সি এন জি চালক হেলপারদের কাছে সময়ের পর সময় জিম্মি হওয়া বাঁশখালী মানুষের একটায় দাবী চিরন্তন যে , বি আর টি সি বাসে চড়ে ন্যায্য ভাড়ায় বাড়ি ফিরবে । হ্যাঁ , সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছিলো বটে , কিন্তু স্বাদ নেবার সে সৌভাগ্য হয়নি বারবার অবহেলিত হওয়ার এই বাঁশখালী জনতার । বাঁশখালী রোড়ে বি আর টি সি বাস চালু হওয়ার ১ মাস ১১ দিনের মাথায় অজানা কারনেই বন্ধ হয়ে যায় বহু বছরের কাক্ষিত এই বি আর টি সি বাস। বি আর টি সি সূত্রে জানা যায় , নতুনব্রিজ থেকে দুইটি কোরিয়ান গাড়ি বাঁশখালীর উদ্দেশ্যে একবার যেত , ্আর একবার ফিরে আসত । যার মধ্যে একটির সিট ক্যাপাসিটি ছিলো ৫৫জন এবং আরেকটির ছিলো ৪৫ জনের ।
জানা যায় , বাঁশখালীর বর্তমান সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিশেষ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের পুরোনো দুটি বাস বাঁশখালী রোড়ে চালু হয়েছিলো । আর বন্ধ হওয়ার পেছনে গাড়ি নষ্ট হওয়াকে কারণ দর্শানো হয় , প্রায় দেড় বছর পার হয়ে গেলেও সেই নষ্ট বাস এখনো সেরে উঠেনি । তবে আর কোনোদিন সেরে উঠবে কিনা সেটাই এখন প্রশ্ন বাঁশখালীবাসীর। সাংসদের বিশেষ উপহার হিসেবে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনের মাধ্যমে বাঁশখালীর মানুষের কাছে তুলে দিয়েছিলো এ বাস দুটি, ঈদ শেষ বাস ও শেষ । ১৯ জুন ২০১৪ সালে চাম্বলের একটি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বর্তমান সাংসদ বলেছিলেন , বাঁশখালী রোড়ে ঈদের আগেই চলবে বি আর টি এসি বাস । যোগাযোগ মন্ত্রির সাথে দেখা করে অনুমোদন করিয়ে নিয়েছি । তারই পরিপ্রেক্ষিতে বি আর টি সি বাস চালু হয়েছিলো ঠিকই কিন্তু সেই স্বপ্ন বোধহয় আজও স্বপ্ন রয়ে গেছে ।

বাঁশখালীর পার্শবর্তী উপজেলা গুলো হলো পটিয়া , চন্দনাইশ , আনোয়ারা । পটিয়ায় ৬ টি ডাবল ডেকার বি আর টি সি বাস প্রতিদিন তিন টিপ করে যাতায়াত করে । আবার আনোয়ারা ও চন্দনাইশে একটি করেও বাস চলে । বি আর টি সি সূত্রে জানা যায় , ঈদের আগে পটিয়া ও আনোয়ারার সাংসদের ব্যক্তিগত খরচে ঈদের স্পেশাল সার্ভিস হিসেবে গাড়ির টিপ আরো বাড়ানো হয় । তাদেরই পার্শবর্তী উপজেলা বাঁশখালীর মানুষকে ঈদ আসলে সারা বছরের তুলনায় চার পাঁচ গুণ বেশি ভাড়া গুনতে হয় ।

বি আর টি সি সূত্রে জানা যায় , আগামী ডিসেম্বরে ইন্ডিয়া থেকে ৫০০ বাস আসবে তখন বাঁশখালী রোড়ে গাড়ির দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান । তাছাড়া গাড়ি বন্ধ হওয়ার পর বাঁশখালী থেকে দায়িত্ববান কেউ যোগাযোগ করেনি বলে জানা যায় । তাহলে কি বাস চালু হওয়া আর একমাস পর বন্ধ হয়ে যাওয়া , এটা বাঁশখালী মানুষের সামনে শো অফ ছিলো না তো ? তবে চলমান বি আর টি সি ’র ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনৈতিক অবস্থার কথাও জানা যায় ।

You May Also Like

One thought on “বাঁশখালীতে বিআরটিসি বাস বন্ধের নেপথ্যে…

Leave a Reply to Śâhíř Râj Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *